প্রকাশিত: Sat, May 25, 2024 1:47 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 7:51 AM

[১]কলকাতায় সিআইডির ১২ দিনের রিমান্ডে কসাই জিহাদ [২]সে এমপি আনারের মরদেহের চামড়া তুলে খণ্ডবিখণ্ড করে

মাসুদ আলম: [৩] ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার কসাই জিহাদ হাওলাদারের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতের আদালত। শুক্রবার বারাসত আদালতের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভঙ্কর বিশ্বাস এই আদেশ দেন। এর আগে চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি পুলিশ। জিহাদ মুম্বাই কসাইয়ের কাজ করে।

[৪]  শুক্রবার কলকাতা সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার জিহাদের বয়স ২৪ বছর। তিনি মুম্বাইয়ের অবৈধ অভিবাসী। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। বাড়ি খুলনার দীঘলিয়ায়।

[৫] সিআইডি জানায়, হত্যার দুই মাস আগে কসাই জিহাদ হাওলাদারকে কলকাতায় নিয়ে আসেন মো. আক্তারুজ্জামান শাহীন। জিহাদ স্বীকার করেছেন, আক্তারুজ্জামানের নির্দেশেই তিনি এবং চার বাংলাদেশি মিলে আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ যেন শনাক্ত করতে না পারে এজন্য মরদেহের চামড়া তুলে টুকরো করে পলিব্যাগে ভরা হয়। জিহাদকে নিয়ে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। 

[৬] কলকাতার ওই ফ্ল্যাটের একটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৪ মে কলকাতার সময় বিকেলে সোয়া ৫টার দিকে দুই ব্যক্তি পেস্ট কালারের একটি ট্রলি ও দুই থেকে তিনটি পলিথিন ব্যাগ নিয়ে সঞ্জীভ গার্ডেনের লিফটে উঠছেন। জানা গেছে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা দুই ব্যক্তি হলেন- আমানুল্লাহ ও জিহাদ। আমান ট্রলি ব্যাগে করে ও জিহাদ পলিথিন ব্যাগে করে আনারের খণ্ড খণ্ড মরদেহ নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যান গুম করার জন্য। এই কিলিং মিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভুঁইয়া। ডিবির কাছে ৮ দিনের রিমান্ডে থাকা আমান সিসিটিভির ফুটেজের ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। 

[৭]  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, আমান জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে; ব্যবসায়িক লেনদেনের কিছু বিষয়ে এমপি আনারের ওপর ক্ষোভ ছিল শাহীনের। এছাড়া আমানের সঙ্গে মতাদর্শগত পার্থক্যও ছিলো আনারের। শাহীন আমানুল্লাহকে দায়িত্ব দিয়ে বলে আসেন, কোনোভাবেই যেন কাজটা মিস না হয় এবং কোনো প্রমাণ যেন না থাকে। 

[৮] একটি সূত্র জানায়, স্বর্ণ চোরাচালানের আর্থিক লেনদেহের জেরে আনারকে হত্যা করা হয়। এর মূলহোতা শাহীন। তাকে সহযোগিতা করেছে সাবেক দুইজন এমপি ও দুই বড় ব্যবসায়ী। শাহীনের ঢাকার বাসায় বৈঠকও করেছে তারা। সে অনুযায়ী, কসাই জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়।

[৯] পুলিশের তথ্যমতে, জিহাদের বাড়ি খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নে। এলাকায় তিনি রং মিস্ত্রি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যা প্রচেষ্টা মামলাসহ, মারামারি, ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামি তিনি।

[১০] এলাকাবাসী জানান, ছোটবেলা থেকে ভালো ছেলে ছিল জিহাদ। গ্রামের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এক দ্বন্দ্বের কারণে মামলায় জড়ায়। এরপর ঢাকায় একটি মামলা হওয়ার পর এলাকায় তাকে দেখা যায়নি। চার ভাই এবং এক বোন তারা। জিহাদের ভাইয়েরা স্কুল ও মাদরাসায় চাকরি করেন। বাবা রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব